সাপকে গলায় জড়িয়ে জলে ডুবে মনসা মাতার ঘট ডুবানো হয়
পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় সীতাপুর ও নবীনমানুয়া গ্রামের পূজো গুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় পূজো হল মনসামাতার পূজো। আর এই মনসা পূজা মানেই সাপের খেলা। এই সাপের খেলা দেখার জন্য জনগণের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
মনসামাতার পূজো দুটি হয়, একটি সীতাপুর মনসাতলায় এবং অপরটি নবীনমানুয়া আমদহতে। প্রায় ১০ বছর আগে পূজোর সময় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে চাল ও চাঁদা আদায় করাহত সাপের খেলা দেখিয়ে। দুই মনসাতলার কমিটিতেই সাপের খেলা হত। গ্রামের মধ্যে যেকোনো স্থানে সাপ বেড়ালে, তা ধরে সাপের বিড়িতে করে মন্দিরের মধ্যে রাখা হত। কিছু দিন অন্তর সাপের বিষ তুলে ফেলা হত। এই বিষ তুলা সাপ নিয়ে সকালে ও বিকালে সীতাপুর মানুয়া সহ পার্শ্ববর্তী স্থানে পূজোর জন্য চাঁদা তোলা হত। পূজোর সময়ও সাপের খেলা দেখানো হত।
সাপের খেলা দেখানো মানে জীবন নিয়ে খেলা দেখানো। এক দিন একটি বড়ো দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এই দুর্ঘটনার পর থেকে নবীনমানুয়া মনসামাতার মন্দিরে সাপের খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সীতাপুর মনসামাতার মন্দিরেও সাপের খেলা দেখানো কমিয়ে দেওয়া হয়।
সীতাপুর মনসামাতার মন্দিরে পূজোর সময় শুধুমাত্র সাপের খেলা দেখানো হয়। এখনও এই সাপের খেলা দেখার জন্য জনগণের ভিড় লক্ষ্য করা যায়।
মনসামাতার ঘট ডুবানোর দিন রাত্রি ১১টায় শুরু হয় সাপের খেলা। বিভিন্ন সাপের খেলা দেখানো হয় যেগুলো পূজোর আগেই ধরে রাখা হয়। ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা ধরে এই সাপের খেলা হয়। এরপর ঐ সাপ গুলোকে ধরে গলায় জড়িয়ে রাখে কমিটির সদস্য বৃন্দ। এরপর পুরোহিত মন্ত্র পড়ে ঘটকে জলে ডুবালে সকলে সাপকে গলায় জড়িয়ে জলে ডুবে। এরপর মন্দিরে সাপের বাক্সে সাপগুলোকে রেখে দেওয়া হয়। পরেরদিন সন্ধ্যায় সাপের খেলা দেখানো হয়। অনেক বছর অনান্য ব্যক্তিদের দ্বারা সাপের বিভিন্ন ভয়ঙ্কর খেলা দেখানো হয়েছে। পূজো শেষ হয়ে গেলে এই সাপগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়।
বর্তমানে এই সাপের খেলা দেখানো কম করে দেওয়া হয়েছে। আগে মানুষ সাপে কামড়ালে গুনিনের কাছে যেত। কিন্তু বর্তমানে মানুষ শিক্ষিত হয়েছে তাই সাপে কামড়ালে সর্বপ্রথম হাসপাতালে চলে যায়। অনেকেই এখনো প্রথমে হাসপাতালে না গিয়ে গুনিনদের কাছে যায় এবং পরে হাসপাতালে যায়। তবে আপনাদের সাথে এমন ঘটনা ঘটলে আগে হাসপাতালে যাবেন।
ধর্মীয় কিছু রীতিমতো এই সাপের খেলা দেখানো হয়। এই খেলা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে দেখনো হয়। তাই কেউ বাড়িতে এমন কিছু করার চেষ্টা করবেন না।
No comments:
Post a Comment